ঘন ঘন ভুলে যাচ্ছেন, অন্যমনস্কতা? ‘নীরব স্ট্রোকের’ শিকার হচ্ছেন না তো?

নীরব স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের সাদা বস্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না এবং প্রতিদিনের অভ্যস্ত কাজগুলিতেও ঘন ঘন বিভ্রান্ত হন।

আপনি কি হামেশাই অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন? বিষয় থেকে নিমেষেই সরে যান বা সম্পূর্ণ ভুলে যান? গবেষকরা বলছেন এটি ‘নীরব স্ট্রোক’ (Silent Stroke)-এর লক্ষণ। ডিমেনশিয়া এবং স্ট্রোকের একটি প্রধান কারণ হল এই ‘নীরব স্ট্রোক’। সেরিব্রাল স্মল ভেসেল ডিসিজ নামে পরিচিত এই রোগটি আসলে বয়স বৃদ্ধির সবচেয়ে সাধারণ স্নায়বিক এক রোগ।

এই ধরনের স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের রক্ত ​​প্রবাহে পরিবর্তন ঘটে এবং মস্তিষ্কের সাদা বস্তু (শরীরের নানা অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের জন্য দায়ী) ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা সময়ের সাথে সাথে স্মৃতি শক্তি এবং অন্যান্য কার্যকলাপের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

নীরব স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের সাদা বস্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না এবং প্রতিদিনের অভ্যস্ত কাজগুলিতেও ঘন ঘন বিভ্রান্ত হন। জার্নাল নিউরোবায়োলজি অফ এজিং-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও, ৫৫ থেকে ৮০ বছর বয়সের মানুষ, যাঁদের মস্তিষ্কের সাদা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের অর্ধেকই মনোযোগ ও কার্যনির্বাহী ক্ষমতার পরীক্ষার মূল্যায়নে স্বাভাবিক পরিসরের মধ্যেই নম্বর পেয়েছেন।

অয়ন দে, কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এই ছাত্র বলেন, “আমাদের ফলাফলগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে, নীরব স্ট্রোকের (Silent Stroke) ঝুঁকি যাঁদের সবথেকে বেশি ছিল বা যাঁদের এই স্ট্রোক হয়েছে সেই ব্যক্তিরা অনেক ক্ষেত্রেই মনোনিবেশ করতে সক্ষম হওয়ার একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখেছে। এমনকি নিউরোসাইকোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে লক্ষণগুলি সনাক্ত হওয়ার আগেই তাঁরা তফাৎ বুঝতে পেরেছেন।”

এই স্ট্রোকগুলিকে ‘নীরব’ বলা হয় কারণ তারা কোনও দীর্ঘস্থায়ী প্রধান পরিবর্তন, যেমন, কথা বলতে অসুবিধা বা পক্ষাঘাতের সমস্যা নিয়ে আসে না। সাধারণত, এই ধরনের স্ট্রোক এমআরআই স্ক্যানের মাধ্যমে বোঝা যায়।

ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রায়ান লেভাইন বলেন, “আলঝাইমার্সের কোনও কার্যকরী চিকিত্সা নেই, তবে মস্তিষ্কের ভাস্কুলার পরিবর্তনগুলি কমাতে ধূমপান বন্ধ, ব্যায়াম, খাবার ঠিক নিয়মে খাওয়া ও চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা, এবং রক্ত চাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।”

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top