অনুপস্থিত ডাক্তারদের ওএসডি করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

কর্মক্ষেত্রে ডাক্তারকে পাওয়া না গেলে সঙ্গে সঙ্গে ওএসডি করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাসপাতালে ডাক্তাদের উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করুন।

তিনি বলেন, রোগীর সেবা করাই ডাক্তার ও নার্সদের মূল কাজ। এটি করতে না পারলে এই পেশায় থাকার দরকার নেই। আজ থেকে যে হাসপাতালে যে ডাক্তারকে পাওয়া যাবে না সঙ্গে সঙ্গে তাকে ওএসডি করুন। একই সাথে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের বেসরকারি হাসপাতালে এসে যেন রোগী দেখতে না হয় সেজন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতেই ‘বিশেষ ধরনের সেবা’ চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সকাল ১০টায় সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং অধীন সংস্থা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা জেলায় একটা করে সার্ভে করে দেখবেন। কত রোগী সেখানে যাচ্ছেন, ডাক্তাররা সেখানে থাকছেন না কেন? যাদেরকে (ডাক্তার) সেখানে বদলি করা হয় তারা যদি কাজ না করে তাদের ওএসডি করে রেখে দিতে হবে, তাদের দরকার নেই। নতুন ডাক্তার দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আর একটি বিষয়- ডাক্তারদের ইন্টার্নি সিস্টেমটা, এটা দুই বছর করে দেয়ার কথা ছিল সেটা করে দিয়েছিলাম। সেটা কার্যকর হয়েছিল কি না জানি না। আমি দুই বছর দেব, কিন্তু একটা বছর তাকে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ওপর নজরদারি করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা দিতে গেলে নার্সের বিষয়টা চলে আসে। আমাদের শুধু ডিপ্লোমা নার্স ছিল, নার্সরা যাতে পিএইচডি পর্যন্ত করতে পারে সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমরা তাদের (নার্স) এত সম্মান দিয়েছি, এত করে দিচ্ছি। শুধু ওষুধ খাওয়ানোর জন্য তো নার্স নয়। রোগীর সেবাটা তাদের করতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক। না করলে সে চাকরিতে থাকবে না, সে চলে যাবে। অনেক প্রাইভেট জায়গা আছে, কাজের অসুবিধা হবে না। আমরা আবার নতুনদের ট্রেনিং করিয়ে নিয়ে আসব। লোকেরও অসুবিধা নেই আমাদের। কিন্তু এইমাত্র আমি যে কথাটা শুনলাম সেটি সত্যি খুব দুঃখজনক, তারা দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে চাকরি পেল বলে রোগী সেবা দেবে না, এটা নাকি তাদের কাজ নয়। যারা এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে আসবে তাদের তো চাকরিতে থাকারই প্রয়োজন নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর অন্য দেশে আমরা কী দেখি- নার্স মোটামুটিভাবে সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট তৈরি করে ডাক্তারকে দেখায়। ডাক্তার তখন যতটুকু দেখা দরকার দেখে চিকিৎসা দেয়। রোগীর সেবা করাটাও নার্সের দরকার। এখন আমরা নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণি করে দিয়েছি বলেই আরেকটা ধাপ তৈরি করতে হবে রোগীর সেবা দিতে, তো ওই দ্বিতীয় শ্রেণির নার্সের তো আমাদের দরকার নেই। তিনি বলেন, আমার পরিষ্কার কথা, আমি সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছি, রোগী যেন সেবা পায়। আর রোগী যদি সেবা না পায় তো সে নার্স কেন আমি পালন-পোষণ করব। এই বিষয়টা একদম পরিষ্কার করে দেয়া উচিত। তাদের যে কাজ সে সম্পর্কে একটি লিখিত তৈরি করে দেয়া উচিত। একজন নার্সের কী দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেভাবেই ট্রেনিংয়ের সময় এই শিক্ষাটা তাদের দিয়ে দিতে হবে। আর এটা অবশ্যই করতে হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top