আমরা তো খারাপ পরিবেশবাদী : সৈয়দ আবুল মকসুদ

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি বিশিষ্ট লেখক বুদ্ধিজীবী সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, পরিবেশ রক্ষার কথা বললেই সরকার মনে করে তাদের বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে। তিনি যশোর-বেনাপোল সড়ক মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে এখানে রাস্তার পাশের শতবর্ষী গাছ রক্ষায় সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানান।

আবুল মকসুদ বলেন, আমরা তো খারাপ পরিবেশবাদী। তাই উচ্চ পর্যায়ে পরিবেশবাদীদের পরামর্শ নিয়ে যশোর-বেনাপোল সড়কের গাছগুলো রক্ষা করুন। তিনি বলেন, যশোর-বেনাপোল সড়কের গাছ রেখেই উন্নয়ন সম্ভব।

আজ সোমবার বাপা ও যশোর-বেনাপোল সড়ক উন্নয়ন ও গাছ রক্ষা সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

‘যশোর-বেনাপোল সড়ক উন্নয়ন ও গাছ সংরক্ষণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের’ দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাপা যশোর জেলা শাখা ও আহ্বায়ক যশোর-বেনাপোল সড়ক উন্নয়ন ও গাছ রক্ষা সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মনি।

আরো বক্তব্য দেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বাপার সহ-সভাপতি রাশেদা কে চৌধুরী, পরিবেশবিদ ও লেখক অধ্যাপক মো: আমিরুল আলম খান, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা: মো: আব্দুল মতিন।

সৈয়দ আবুল মকসুদ আরো বলেন, গাছের নিচে পড়ে মানুষ মারা যায় বলে কি সব গাছ কেটে ফেলতে হবে? তিনি প্রশ্ন করেন- গাছ বুড়ো হয়ে গেছে বলে তাদের মেরে ফেলতে হবে? এ কেমন যুক্তি দিচ্ছে সরকারের কিছু কিছু লোক? সরকারের কারো কারো এধরণের বক্তব্য মনমানসিকতা বড়ই বেদনাদায়ক। তাহলে দেশের যারা বুড়ো মানুষ তাদেরেকও কি বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতে হবে?

তিনি বলেন, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলা থেকে বাঁচার জন্য পাশ্ববর্তী ভারতে আশ্রয় নিতে কিভাবে যশোর-বেনাপোল সড়ক ব্যবহার করেছিল সে ইতিহাস আগে জানতে হবে। এদেশের মানুষেরা এসড়ক দিয়ে সেদিন পালিয়েছিল তা কেউ নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। এখানে আশ্রয় নিয়ে অনেক সন্তানের জন্ম হয়েছিল এ সড়কের গাছতলায় হয়েছিল। আবার এসব গাছের নিচ শত শত মানুষ মারা গেছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে। ওই নয় মাসে শত শত শিশুর জন্ম হয়েছিল। এ রোডের গাছগুলো ব্রিটিশ আমলে রোপিত হয়। এসব গাছে বয়স এখন দেড়শ’ বছর হবে। এগুলো রেখেই রাস্তা করা যায়।

তিনি বলেন, বর্তমানে যে সরকার ক্ষমতায় আছে তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃৃত্ব দিয়েছিলেন। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্ব ছিলেন তাদের হাতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে তা খুবই বেদনাদায়ক।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top