ইরানের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, মার্কিন নৌবাহিনী হরমুজ প্রণালিতে ইরানের একটি ড্রোনকে ভূপাতিত করেছে। তিনি বলেন,‘বৃহস্পতিবার ড্রোনটি জাহাজের এক হাজার গজের মধ্যে চলে আসার পর ইউএসএস বক্সার নামে পানিতে এবং স্থলে চলতে পারে এমন একটি যুদ্ধ জাহাজ প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এটিকে ভূপাতিত করে।’

অবশ্য ইরান বলছে, ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার কোন খবর তাদের কাছে নেই। গত জুন মাসে ইরান ওই এলাকায় একটি অত্যাধুনিক মার্কিন সামরিক ড্রোন ভূপাতিত করে।

এর আগে, তেহরান জানায়, জ্বালানি চোরাচালানের অভিযোগে বিদেশি একটি ট্যাঙ্কার এবং ১২ জন ক্রুকে আটক করেছে তারা।

গত মে মাস থেকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল এলাকায় ইরানের বিরুদ্ধে ট্যাংকারে হামলার অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সব অভিযোগ নাকোচ করেছে ইরান। সাম্প্রতিক এসব ঘটনা ওই এলাকায় সামরিক সংঘাত শুরু করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ট্রাম্প কি বলছেন?

হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন,‘হরমুজ প্রণালিতে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সম্পর্কে সবাইকে জানাতে চাই আমি। এটি ইউএসএস বক্সার সম্পর্কিত যা একটি উভচর যুদ্ধ জাহাজ। অনেক বেশি কাছে প্রায় এক হাজার গজের মধ্যে চলে আসার কারণে ইরানের একটি ড্রোনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে বক্সার। ড্রোনটি বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ারি এবং থামার নির্দেশ উপেক্ষা করে জাহাজ এবং ক্রুদের নিরাপত্তার প্রতি হুমকী তৈরি করায় এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়। ড্রোনটি সাথে সাথেই ধ্বংস করা হয়।’

ট্রাম্প আরো বলেন,‘আন্তর্জাতিক পানিসীমায় চলাচলকারী জাহাজের বিরুদ্ধে ইরানের বহু উস্কানিমূলক ও শত্রুভাবাপন্ন আচরণের মধ্যে এটি একটি। নিজেদের লোকবল, স্থাপনা এবং স্বার্থ রক্ষার পুরো অধিকার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।’

এর আগে ওয়াশিংটন বলে, ইরানের উচিত আটক করা বিদেশি জাহাজটিকে দ্রুত ছেড়ে দেয়া।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম দেশটির রেভ্যুলিউশনারি গার্ডের উদ্ধৃতি দিয়ে বলে, জাহাজটি ১০ লাখ লিটার জ্বালানি চোরাচালান করছিলো। পরে পানামার পতাকা সম্বলিত রিয়াহ ট্যাঙ্কারের চারপাশে ইরানের স্পিডবোটের টহল দেয়ার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

ইরান জানায়, লারাক দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ট্যাংকারটি আটক করা হয়।

এর পেছনের ঘটনা কি?

২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে আসার পর ইরানের তেল সেক্টরের উপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মার্কিন ঘোষণার পর উপসাগরীয় এলাকায় উত্তেজনা দানা বাঁধা শুরু করে। গত মে এবং জুন মাসে ওমান সাগরে দুটি তেলের ট্যাংকারে হামলার ঘটনায় ইরানকে দোষ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। যা অস্বীকার করেছে তেহরান।

হরমুজ প্রণালিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম অত্যাধুনিক নজরদারি ড্রোন ভূপাতিত করে ইরান। তেহরানের দাবি, ইরানের আকাশসীমা লংঘন করেছিলো ওই ড্রোনটি। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করে ইরান।

তবে মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায়, ঘটনার সময় আন্তর্জাতিক পানিসীমার উপরে ছিলো ড্রোনটি। ইরানের এ ধরণের হামলার নিন্দাও জানায় তারা। সূত্র : বিবিসি।

Share this post

scroll to top