এসপির নাম ভাঙ্গিয়ে ময়মনসিংহ শহরে অটোচালকের চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ শহরে অঘোষিতভাবে বাড়ছে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার ভাড়া। কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে শহরের অটো চালকরা ভাড়ার নামে যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করে প্রকাশ্যে চাঁদাবজি করছে। কেউ প্রতিবাদ করলে পুলিশ প্রশাসনের উধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ভাঙ্গিয়ে হুমকিও দিচ্ছে। এসব অপরাধীদের দায়িত্বরত পুলিশের কাছে হাজির করে অভিযোগ করলে পুলিশ দায়িত্ব পালন না করে উল্টো থানায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দিচ্ছে। ফলে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে যেসব অপরাধী চালক শহরে নৌরাজ্য সৃষ্টি করছে তারা পার পেয়ে যাচ্ছে সহজেই।

ভিডিওটি দেখুন নিচে

এদিকে, সোমবার অতিরিক্ত ভাড়া কেন আদায় করছে এর প্রতিবাদ জানালে এক চালক এ প্রতিবেদককে হুমকি দিয়ে জানায়, আমাদের সম্পর্কে পুলিশে বলে, পৌরসভায় বলে কিছুই হবেনা। তার গাড়িটি নেত্রকোনার এসপির বলে দাবি করলে গাড়ির লাইসেন্স দেখতে চাইলে নাম্বার প্লেট দেখাতে পারেনি ওই চালক। এক পর্যায়ে এই চালককে নিয়ে চড়পাড়া মোড়ের ট্রাফিক বক্সে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইনচার্জ সাইফ এর কাছে গেলে চালক স্বীকার করে অটো রিক্সাটি এসপির। তারপর ট্রাফিক ইনচার্জ ওই চালককে কিছু না বলে অভিযোগকারীকে বলেন, ভাই আপনি পৌরসভায় তার ছবি দিয়ে একটি অভিযোগ দিন। কিন্তু প্রকাশ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ জনগণের সাথে কেন প্রতারণা করছে, এই বিষয়টি কি পুলিশের নয়-এমন প্রশ্ন করলে ওই ট্রাফিক ইনচার্জ সাইফ জানান, এটার জন্য থানায় অভিযোগ দিতে হবে।

সোমবার দুপুরে শহরে ঘুরে দেখা যায় অটোচালকরা নির্দিষ্ট স্থানের ভাড়া আদায় করছে ২/৩গুণ হারে। শম্ভুগঞ্জ পাটগুদাম ব্রীজ মোড় থেকে চড়পাড়া মোড় পর্যন্ত ৫ টাকার ভাড়ায় আদায় করছে ১০-১৫ টাকা। ব্রীজ মোড় থেকে গাঙ্গিনারপাড় মোড় পর্যন্ত ৫ টাকার ভাড়া আদায় করছে ১০ টাকা। আবার চড়পাড়া মোড় থেকে গাঙ্গিনারপাড় মোড় পর্যন্ত ৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ১০ টাকা। গাঙ্গিনারপাড় মোড় থেকে টাউনহল মোড় পর্যন্ত ৫ টাকার ভাড়া নিচ্ছে ১৫ টাকা। ব্রীজ মোড় থেকে টাউন হল যেতে ১০ টাকার ভাড়া আদায় করছে ২০ টাকা।

শহরের পুরাতন ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকার মামুন নামের এক ব্যক্তি জানান, গাঙ্গিনারপাড় থেকে পুরাতন ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে চালক জানান, এ বিষয়টি সবাই জানে। গোপন কিছু না।

এদিকে জেলা প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়েই যাত্রীদের কাছ থেকে জোড় পূর্বক পুলিশের সামনেই দুই/তিনগুন ভাড়া নিচ্ছে অটোচালকরা। অনেক অটোচালক যাত্রীদের হুমকি দিয়ে বলছেন কেউই তাদের কিছুই করতে পারবেনা। সবাইকে ম্যানেজ করেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলেও জানান অটোচালকরা। আর নগরীর মোড়ে মোড়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। ভুক্তভোগী অনেকেই জেলা পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিষয়টি অবগত করলেও অজ্ঞাত কারণেই চুপ করে আছে পুলিশ প্রশাসন। অনেকের মতে, চালকরা পুলিশের সামনে নীরব চাঁদাবাজি করছে একমাত্র আইনশৃঙ্খলা পরিস্তিতির অবনতির কারনেই।

অপরদিকে ভুক্তভোগী যাত্রীদের প্রশ্ন, রাস্তায় একজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে যে হারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তাতে করে অপরাধ কমানো পুলিশ প্রশাসনের জন্য মারাত্বক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। সেই সাথে একজন পুলিশ কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবজি করার কথা সরাসরি পুলিশ কর্মকতার নিকট স্বীকার করলেও আইনগত কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় জনমনে হতাশা ও পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠতে পারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top