গর্ভাবস্থায় এই খাবার খেলে সন্তান হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্মায়

গর্ভাবস্থায় উচ্চ কলেস্টেরল যুক্ত চর্বি ও বেশি চিনি খেলে সন্তান জন্ম নিতে পারে হার্টের সমস্যা নিয়ে। গবেষকেরা ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে দেখিয়েছেন যে, যেসব ইঁদুর গর্ভাবস্থার আগে ও গর্ভাবস্থায় চর্বি ও চিনিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছে এদের বাচ্চা জন্ম নিয়েছে দুর্বল হার্ট নিয়ে।

বিস্ময়কর তথ্য হলো, এ ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তিন প্রজন্ম পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে। এমনকি শেষ প্রজন্মের ইঁদুরটি স্থূল না হলেও এবং মানসম্পন্ন খাবার খাওয়ার পরও দুর্বল হার্টে সমস্যা রয়েই গেছে।

ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সেন্ট লুইসের স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকেরা গর্ভ ধারণ করার আগে এবং গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্যসম্মত ওজন ধরে রাখা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেছেন। স্থূলকায় মা ইঁদুরের বেশির ভাগ শিশুর বাম ভেন্ট্রিকলের (ভেন্ট্রিকল রক্ত পাম্প করে হার্টের বাইরে পাঠিয়ে থাকে) ওজন বেশি ছিল।

গবেষকেরা বলেন, মানব দেহে বাম ভেন্ট্রিকলের বেশি ওজন দুর্বল হার্ট মাসলের পরিচায়ক, যা হার্ট ফেইলিওর ঘটিয়ে থাকে। গবেষকেরা দেখেছেন যে, তৃতীয় প্রজন্মের স্ত্রী ইঁদুর ছানাদের মধ্যে হার্ট ফেইলিওরের ইতিহাস কম। তারা এ প্রসঙ্গে বলছেন, পুরুষ ও স্ত্রী ইঁদুরের হার্টের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে, যা এ মুহূর্তে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না।

তারা বলেন, এই গবেষণায় অনেক প্রশ্নের উদয় হয়েছে, কিন্তু সব প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আমরা আরো গবেষণা চালিয়ে যাব।

ব্রিটেনের ডেইলি মেইলে প্রকাশিত এ গবেষণায় বলা হয়, সমস্যাটা স্থূল মায়ের অথবা স্থূল মা ইঁদুরের প্রজনন পদ্ধতির কি না তা জানতে গবেষকেরা স্থূল মা ইঁদুরের উর্বর ডিম স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের মা ইঁদুরের দেহে স্থাপন করে দেখতে পান যে, সেই ডিম থেকে জন্ম নেয়া ইঁদুর ছানাদের একই হার্ট সমস্যা রয়েই গেছে। এই হার্ট সমস্যা এমনিতেই এদের মা থেকে ছানাদের মধ্যে চলে আসেনি।

তারা দেখেছেন স্থূল মা ইঁদুরের পুরুষ ছানাকে মানসম্মত খাবার খাওয়ানোর পরও সে যে বাচ্চা উৎপাদন করেছে ওদেরও হার্টে একই ধরনের সমস্যা ছিল। গবেষকেরা ইঁদুরের শরীরের পাওয়ার স্টেশন বলে খ্যাত ক্ষুদ্র মাইটোকন্ড্রিয়াতে পরিবর্তন দেখতে পেয়েছেন।

ইউনাইটেড মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিজিজ ফাউন্ডেশনের তথ্যে বলা হয়েছে যে, এটা বিস্ময়কর যে, মানব শরীরে মা থেকে যেসব রোগ উত্তরাধিকার সূত্রে সন্তান পেয়ে থাকে তা মাইটোকন্ড্রিয়াল সমস্যার কারণেই হয়ে থাকে। কারণ মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ মা থেকে সন্তানে চলে আসে।

এই গবেষণার সহ-গবেষক ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অবস অ্যান্ড গাইনিকোলজির অধ্যাপক ড. কেলি জানিয়েছেন, আমরা এখন জানি যে, গর্ভবতী মায়ের স্থূলতা অনাগত সন্তানের হার্ট সমস্যার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি পুরুষ ইঁদুর থেকেও এ সমস্যা স্থানান্তরিত হচ্ছে বাচ্চাদের দেহে। আমাদের গবেষণা শুরু করতে হবে, ডিম ও শুক্রাণুর ডিএনএর নিউক্লিয়াসে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top