ঠোঙ্গার দোকানে মিলল ৩৭ মণ সরকারি নতুন বই

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় একটি ঠোঙ্গার দোকানে মাধ্যমিক শ্রেণীর ৩৭ মণ সরকারি বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে। জেলার নবীনগর উপজেলা সদরের তিতাস নদীর পাড়ে শহিদ মিয়ার ঠোঙ্গার দোকানে ১হাজার ৪৭১ কেজি মাধ্যমিক শ্রেণীর সরকারি বইয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধান পাওয়া এসব বইয়ের সবই নতুন এবং ২০১৩-১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ সালের। তাছাড়া সন্ধান পাওয়া সবগুলো বইয়েরই মলাট ছেড়া রয়েছে বলে দেখা গেছে। বইয়ের ভেতরের পাতা পড়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে বইগুলো মাধ্যমিক শ্রেণীর। আর এসব বই নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ওই ঠোঙ্গার দোকানে বিক্রি করা হয়। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিহার রঞ্জন চক্রবর্ত্তীর মাধ্যমে এসব বই দোকানে বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে।

দোকানি শহিদ মিয়া জানান, নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রতি কেজি বই ১২টাকা দরে নিহার বাবুর মাধ্যমে ১হাজার ৪৭১ কেজি বই ১৭ হাজার ৬৫২ টাকা দিয়ে কিনেছি। বইগুলো কিসের সেটা আমার জানা নাই। আমার কাছে বই কেনার স্লিপ রয়েছে।

এ বিষয়ে নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউছার বেগম বলেন, আমার স্কুল থেকে কোনো বই বিক্রয় করা হয়নি। তবে কিছু খাতা বিক্রির কথা বলেছিলাম।

এদিকে নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বই বিক্রির বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক নিহার রঞ্জন চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়েই বইগুলো বিক্রি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ মাসুম জানান, স্কুলের পুরাতন বই নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। হকারের কাছে এই বইগুলো কারা এবং কিভাবে বিক্রি করেছে সে বিষয়ে তদন্ত করতে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী চারদিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করবে।

খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার ইতি বেগম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানিয়েছেন, সরকারি নিলাম ছাড়া এতো বিপুল পরিমাণ বই বিক্রয় করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সন্ধান পাওয়া এসব বই স্কুল থেকে বিকিত্র করার আগে নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়নদের দিয়ে গত কয়েক দিন যাবৎ সকল বইয়ের মলাট ছেড়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের চোখ ফাঁকি দিতে শুক্রবার জুমআর নামাজের সময় বইগুলো স্কুল থেকে ঠোঙ্গার দোকানে পাচার করা হয়।

সন্ধান পাওয়া এসব বইয়ের সবই নতুন এবং ২০১৩-১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ সালের। তাছাড়া সন্ধান পাওয়া সবগুলো বইয়েরই মলাট ছেড়া রয়েছে বলে দেখা গেছে। অপরদিকে নতুন বিল্ডিং তোলার নামে স্কুলের ভেতরে কয়েকটি মূল্যবান গাছও কেটে ফেলা হয়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top