‘নির্বাচনের রেশ না কাটতেই হকারদের পেটে লাথি মারা শুরু’

প্রবীণ শ্রমিক নেতা মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই হকারদের পেটে লাথি মারা শুরু হয়েছে।

হকার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সোমবার এক সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, গত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিল সরকার প্রতি ঘরে ঘরে একজনকে চাকুরির ব্যবস্থা করবে। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে বরং যারা নিজেরা নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে, তাদেরকে উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে গরিব হকারদের সর্বশান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, পুনর্বাসন ছাড়া তিনি হকার উচ্ছেদ করবেন না। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন এবং অবিলম্বে হকারদের ফুটপাতে বসার ব্যবস্থা করবেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাসিম কবির। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মনজুরুল আহসান খান।

এদিকে সমাবেশে হকার্স ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রায় ১যুগ ধরে হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ১০ দফা দাবির সংগ্রাম করে যাচ্ছে। সংগ্রামের এক পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন হকারদের সাথে পরামর্শ করে, কিভাবে হকারদের সমস্যা সমাধান করা যায়। হকারদের সমস্যা সমাধানের জন্য কতকগুলো প্রস্তবানা হাজির করা হয়।

তারা বলেন, যতক্ষণ হকারদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা যাচ্ছে না, ততক্ষণ ফুটপাতের ১/৩ অংশ জায়গা হকারদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হোক এবং তাদেরকে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি করে আইডি কার্ড দেওয়া হোক। আর শহরে যানজট নিরসনের জন্য প্রাইভেট কারগুলো চলাচলের জন্য জোড়-বিজোড় পদ্ধিত চালু করা হোক। বড় বড় মার্কেটগুলো যাতে বিল্ডিং কোড মেনে চলে তার জন্য কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হোক।

বেশির ভাগ মার্কেটগুলোতে গাড়ি পার্কিং-এর কোনো ব্যবস্থা নেই। গাড়িগুলো যত্রতত্র এলোমেলোভাবে রাস্তার উপর রাখার কারণে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। আমাদের এই প্রস্তাবনা তখন নগর উন্নয়বিদদের প্রসংশা কুড়াতে সক্ষম হয়।

হকার্স নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা যতদূর জানি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা জনাব কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে হকার্স পুনর্বাসনের জন্য একটি প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে হঠাৎ করে হকার উচ্ছেদ করা অত্যন্ত দুঃখ জনক। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যতক্ষণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা না হবে, ততক্ষণ একটা হকার উচ্ছেদ করা যাবে না।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হকার্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জসিম, সহ-সভাপতি মোঃ গোলাপ, অর্থ সম্পাদক মোঃ মজিদ, আহম্মদ আলী, বিল্লাল হোসেন, মোঃ শহীদ, মোঃ ফারুখ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক হযরত আলী। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে আরামবাগ, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর দিয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top