নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় আসামী পক্ষের উকিল আ’লীগ নেতা!

সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের আইনি সহায়তা দেওয়ায় ফেনীর কাজিরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নূর হোসেন বলেন, ‘গতকাল উপজেলা কমিটি বসে অ্যাডভোকেট বুলবুল সোহাগকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

তবে এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বুলবুল সোহাগ বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। হয়তো ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটেছে।’

যদিও আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে, দলের যেকোনো নেতাকে বহিষ্কারের এখতিয়ার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের। কমিটি বাতিলের ক্ষমতাও কেন্দ্রের। তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে কাউকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করার ক্ষমতা তৃণমূলের আছে। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কেন্দ্রীয় কমিটিরই।

পোড়া শরীর নিয়ে টানা পাঁচ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল বুধবার রাতে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন নুসরাত। আজ ময়নাতদন্তের পর তাঁর মরদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

নুসরাত এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি সোনাগাজীর উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের মাওলানা এ কে এম মুসা মানিকের মেয়ে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। গত ৬ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদ্রাসা ভবনের ছাদে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন দেয়। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

পরিবারের অভিযোগ, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহানের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। নুসরাত বিষয়টি বাসায় জানালে তাঁদের মা সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় অধ্যক্ষের লোকজন। কিন্তু নুসরাত অপারগতা প্রকাশ করেন।

নুসরাতকে গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে অধ্যক্ষসহ কয়েকজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top