নুসরাত হত্যার অন্যতম আসামি ভালুকায় গ্রেফতার

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির নিহতের হওয়ার মামলার অন্যতম আসামি নূর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাকে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, নূর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত জাহান রাফি মারা যান।

এর আগে গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। এ মামলা তুলে নেয়া এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নুসরাত যা অভিযোগ করেছিলেন তা সব মিথ্যা— বলার জন্য চাপ দিতে থাকে দুর্বৃত্তরা। এতে নুসরাত ও তার পরিবার রাজি হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার আগে নুসরাত চিকিৎসকদের কাছেও জবানবন্দি দেন।

ঘটনার প্রথম থেকেই সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নূর উদ্দিনকে প্রধান সন্দেহভাজনদের একজন মনে করছেন স্থানীয়রা।

তাদের ভাষ্যে, নুসরাতকে আগুনে ঝলসে দেওয়ার ঘটনার আগের দিন ৫ এপ্রিল রাতে এবং ঘটনার দিন ৬ এপ্রিল সকালেও নূর উদ্দিনকে মাদ্রাসার মূল ফটকে দেখা গেছে। তার সঙ্গে ছিলেন শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম নামে আরও একজন। এ দু’জনই মামলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় নম্বর আসামি।

নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা গ্রেপ্তার হলে তার মুক্তির দাবিতে ‘মুক্তি পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হন নূর উদ্দিন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক হন শাহাদাত। তাদের নেতৃত্বেই সিরাজ উদ দৌলার মুক্তির দাবিতে ২৮ ও ৩০ মার্চ উপজেলা সদরে দুই দফা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। অভিযোগ রয়েছে যৌন হয়রানির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এরাই নুসরাত ও তার স্বজনদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top