ভালুকায় ২৮ টাকার ইনজেকশন ২৭০ টাকা!

ময়মনসিংহের ভালুকায় ২৮ টাকা মূল্যের ইনজেকশন ২৭০ টাকা রাখার অভিযোগ উঠেছে এক ফার্মেসির বিরুদ্ধে।

রোববার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন নাবিল ফার্মেসির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে।

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কবলে পড়া এক রিকশাওয়ালার কাছ থেকে হাসপাতালের সামনে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন নাবিল ফার্মেসির মালিক ক্ষতস্থান অবসকরণের জীবন রক্ষাকারী ২৮ টাকা মূল্যের ইনজেকশন ২৭০ টাকা রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি মরার উপর খাড়ারঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, হালুয়াঘাট উপজেলার নাসুল্লাহ গ্রামের বাসিন্দা সুরুজ মিয়ার ছেলে সুজন (১৭) ভালুকা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে বাসা ভাড়া নিয়ে অটোরিকশা চালাতেন। রোববার সন্ধ্যায় তিন যুবক তার রিকশা নিয়ে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের চাপরবাড়ি এলাকায় যাবে বলে ভাড়া করে।

ওই ওয়ার্ডের জোরমান্দা এলাকায় পৌঁছামাত্রই ওই তিন যুবক তার অটোরিকশা ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এ সময় সুজন তার রিকশার ওয়াইরিংয়ের তার ছিঁড়ে ফেললে ছিনতাইকারীরা তার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

সুজন মারা গেছে ভেবে তিন ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। আধা ঘণ্টা পর সুজনের জ্ঞান ফিরে এলে তার চিৎকারে আশাপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে।

এ সময় হাসপাতালে ক্ষতস্থান অবসকরণের ওষুধ না থাকায় জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের জেসোকেইন’ ইনজেকশন বাইরে ফার্মেসি থেকে কিনতে গেলে নাবিল ফার্মেসির মালিক আবদুর রাজ্জাক ২৭০ টাকা রাখেন। অথচ ওই ইনজেকশনের প্যাকেটের গায়ে মূল্য লেখা রয়েছে ২৮.৭৪ টাকা।

ইনজেকশনটি বেশি মূল্যে কিনে নেয়ার পর জরুরি বিভাগে উপস্থিত হাসপাতালের স্টাফ, দর্শনার্থী ও রোগীর লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত টাকা থেকে কিছু টাকা লাভ রেখে বাকি টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আবদুর রাজ্জাককে অনুরোধ করেন অনেকে।

কিন্তু তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে বলেন, পুলিশ এলেও লাভ নেই। আমি বেশি মূল্যে ওষুধ কিনে এনেছি। তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।

বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামালকে ফোনে অবগত করলে দোকান মালিক বেশি টাকা রাখার কথা স্বীকার করেন।

ভালুকা বাজার ওষুধ সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন বণিক জানান,ওষুধটি মার্কেটে কম পাওয়া যায়। যখন ইনজেকশনটি একেবারেই মার্কেটে পাওয়া যেত না তখন আমরা ৫০ টাকা করে বিক্রি করতাম। এখন এ ওষুধ মার্কেটে পাওয়া যায়।

আহত সুজন জানান, ভাড়ার কথা বলে রাস্তায় নিয়ে রিকশা ছিনতাই করার চেষ্টা করে তিনজন। রিকশা নিতে না পেরে আমার মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে সঙ্গে থাকা সারা দিনের আয়ের ৫০০ টাকা ও মোবাইল সেটটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

জরুরি বিভাগের কর্মরত ডা. আদনান বলেন, ২৮ টাকার ওষুধ ২৭০ টাকা রাখা ঠিক হয়নি। যদি বেশি দামে কিনে থাকেন কিছু টাকা লাভ করে বিক্রি করতে পারতেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. একরাম উল্লাহ জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। শুনেছি বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামাল জানান, আমার কাছে ওষুধের দোকানদার বেশি টাকা রাখার কথা স্বীকার করেছেন। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

Share this post

scroll to top