শাফাত আহমেদের জামিন বাতিল

রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদের জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭–এর বিচারক খাদেমুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে এ মামলায় গত বছরের ২৯ নভেম্বর শাফাত আহমেদ জামিন পান। তার জামিন বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেন। আজ সেই আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

মহানগর সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল্লাহ আবু এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ মামলার প্রধান আসামি শাফাত আহমেদের জামিন বাতিল চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তাঁর জামিন বাতিল করে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া এ মামলার আরেক আসামি শাফাতের বন্ধু কারাবন্দী নাঈম আশরাফের পক্ষে জামিন চাওয়া হলে তা নাকচ করেন আদালত।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন জানিয়ে ওই বছরের ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। সেখানে ধর্ষণের শিকার হন তারা।

জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন।

তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর শাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তাঁরা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং তাঁকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম তাদের মারধর করেন। তাঁরা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানানোর পর শাফাত তাঁর দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। এ ঘটনায় লোকলজ্জার ভয়ে মানসিকভাবে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাঁদের কথামতো না চললে বা এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top