শিশুর হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে দেয়া সেই যুবলীগ নেতা আটক

৫ বছরের শিশু ইয়ামিন মিয়া। অবুঝ এই শিশুর ডান হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে দিয়েছিলেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায়। শিশুর হাতের আঙ্গুল কেটে পরিচিতি পাওয়া এই সরকার দলীয় নেতার নাম অদুদ মিয়া। তিনি উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সোলেমানপুর গ্রামের জমির আলীর ছেলে।

মামলা ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৪মার্চ শনিবার বিকেলে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় শিশু ইয়ামিন গরুর ঘাস কাটার জন্য মহালিয়া হাওর পাড়ে ময়নাখালি নির্মাণাধীন বাঁধের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় পা পিছলে বাঁধের নিচে পড়ে যায়। এ সময় নির্মাণাধীন অবস্থায় থাকা এই বাঁধের ড্রেসিং করা কাজের সামান্য ক্ষতি হয়। এরপর ময়নাখালি বাঁধের ২৮নং পিআইসি সুলেমানপুর গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে অদুদ মিয়া শিশু ইয়ামিনের হাতে থাকা কাঁচি কেড়ে নিয়ে তার(ইয়ামিনের) হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে দেয়।

পরে রক্তাক্ত ও গুরুতর আহতাবস্থায় শিশু ইয়ামিনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশু ইয়ামিন যুবলীগ নেতা আব্দুল অদুদের বর্বরতার শিকার হওয়ার পর বিভিন্ন গনমাধ্যমে খবরটি জোরালোভাবে প্রকাশিত হয়।

শিশু ইয়ামিন (৫) তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামের শাহানুর মিয়ার ছেলে এবং সুলেমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র।

এদিকে ইয়ামিনে হাতের আঙ্গুল কেটে দেয়ার খবর পেয়ে ঘটনার রাতেই সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা পুলিশ সুপার বরকত উল্ল্যাহ খান। তিনি আহত ইয়ামিন মিয়ার চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। এছাড়াও তৎকালীন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাগনসহ ইয়ামিন মিয়াকে দেখতে যান।

এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর ও মামলার তদর্ন্তকারী কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান, উপজেলায় মহালিয়া হাওরের ময়না খালি ফসল রক্ষা বাঁধে গত বছরের ২৪ মার্চ তুচ্ছ কারণে ৫ বছরের শিশু ইয়ামিন মিয়ার ডান হাতের ৪টি আঙ্গুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেয় প্রকল্পের ২৮নং পিআইসি শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ আহ্বায়ক অদুদ মিয়া। এ ঘটনায় অদুদ মিয়া ও তার সহোদর আলম মিয়াকে আসামী করে ২৬ মার্চ ইয়ামিন মিয়ার বাবা শাহানুর মিয়া বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৪(৩)১৮ইং।
তারা আরো বলেন, মামলা হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা অদুদ পলাতক ছিল। মামলা দায়েরের পর অদুদের ছোট ভাই আলম মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাহিরপুর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বুধবার (২০মার্চ) দুপুরে সোলেমানপুর বাজার থেকে আসামী যুবলীগ নেতা অদুদ মিয়াকে আটক করে। পরে বিকেলে তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top